মোবাইলে আসক্তি দিন দিন যেভাবে বাড়ছে

 ডিজিটাল যুগে মোবাইলে আসক্তি দিন দিন যেভাবে বাড়ছে তা বলে শেষ করা মুশকিল। কেননা আধুনিক যুগে মোবাইল ফোন একটি সর্বাধিক ব্যাবহিত প্রযুক্তি। আজকের এই পোস্টে মোবাইলে আসক্তি দিন দিন যেভাবে বাড়ছে তা নিয়ে বিস্তারিত  আলোচনা করা হবে।

মোবাইলে আসক্তি দিন দিন যেভাবে বাড়ছে

মোবাইল ফোন বা স্মার্টফোন বতর্মানে একটি ডিজিটাল ডিভাইস। এটির সাথে পরিচিত না  এমন ব্যক্তি খুব কমই আছে। আজকে আমরা মোবাইল ফোন বা স্মার্টফোন এর উপকার এবং অপকার সম্পর্কে জানব।

পোস্ট সূচিপত্রঃ মোবাইলে আসক্তি দিন দিন যেভাবে বাড়ছে 

মোবাইলে আসক্তি দিন দিন যেভাবে বাড়ছে 

বর্তমান যুগ প্রযুক্তির যুগ। এই প্রযুক্তির যুগে মানুষ বিভিন্ন ভাবে বিভিন্ন প্রকার ডিজিটাল ডিভাইসের উপর নির্ভরশীল। তার মধ্যে একটি হলো মোবাইল ফোন বা স্মার্টফোন। বিভিন্ন প্রকার প্রয়োজনে বা কাজে এই মোবাইল ফোন বা স্মার্ট ফোনের চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলেছে। যার কারনে এর আসক্তি বহু গুনে বৃদ্ধি পাচ্ছে। 

এই মোবাইল ফোন বা স্মার্ট ফোনের যেমন বিভিন্ন প্রকার উপকার বা কাজ রযেছে তেমনিভাবেই রযেছে বিভিন্নরকম ক্ষতিকর দিক। আজকে মোবাইল ফোনের বিভিন্ন উপকার এবং ক্ষতিকর বিষয় নিয়ে বিস্তারিত  আলোচনা করা হবে। তাই মোবাইলে আসক্তি দিন দিন যেভাবে বাড়ছে এবং এর উপকার এবং ক্ষতিকর বিষয় গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আমাদের সাথেই থাকুন।

মোবাইল ফোন বা স্মার্ট ফোনের আসক্তি কি

 মোবাইল ফোন বা স্মার্টফোনের আসক্তি বলতে আমরা  আমাদের নানান প্রয়োজনে বিভিন্ন ডিভাইস সহ বিভিন্ন মাধ্যম ব্যবহার করে থাকি তারই মধ্যে একটি হলো এই মোবাইল ফোন। আর এইসব ডিভাইস আমরা অতি প্রয়োজনে ব্যবহার করে থাকি যাতে করে আমরা আমাদের সমাধান দ্রুত  করতে পারি। কিন্তু সেই ডিভাইস যখন আপনাকে ব্যবহার করবে তখন সেটি হল আসক্তি। 

মোবাইলে আসক্তি কোন শ্রেণীর লোকের মধ্যে বেশি 

মোবাইলে আসক্তি বর্তমানে একজন শিশু থেকে শুরু করে বয়স্ক ব্যক্তি পর্যন্ত সকলেই এই ডিজিটাল ডিভাইস অর্থাৎ মোবাইল ফোনে আসক্তি। তাছাড়া আধুনিক এই যুগে বিভিন্ন ডিজিটাল প্লাটফর্ম গুলোকে ব্যবহার করে মানুষ মুহূর্তের মধ্যেই তার অজানা জিনিসগুলোকে খুব সহজেই জানতে সক্ষম হচ্ছে আর এ কারণেই দিন দিন মোবাইলের আসক্তি বৃদ্ধি পাচ্ছে। 

এই মোবাইল ফোনে আসক্তি জিনিসটা সকলের মধ্যে ছড়ালেও বিশেষ করে এই আসক্তি বর্তমান সময়ের যুবসমাজকে বিভিন্নভাবে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছাতে সক্ষম। একজন যুবক সকালে ঘুম থেকে উঠা থেকে শুরু করে ঘুমানোর আগ পর্যন্ত বিভিন্ন  প্রয়োজনে এবং অপ্রয়োজনে এই মোবাইল ফোন বা স্মার্টফোনের সাথে গভীরভাবে জড়িত। নিচে আমরা এর বিস্তারিত সম্পর্কে আরো আলোচনা করব। 

মোবাইলে আসক্তি হওয়ার বিভিন্ন কারণ 

মোবাইল ফোন বা স্মার্টফোনে আসক্তি হওয়ার বিভিন্ন কারণ রয়েছে। এরমধ্যে একটি বড় কারণ হলো বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করা। এক সময় এ মোবাইল ফোনকে মানুষ তার অতিপ্রয়োজনে ব্যবহার করত। এবং এটি ব্যবহারে ভয়বহুল খরচ বেশি ছিল। কিন্তু আধুনিক বিশ্বে প্রযুক্তির ছোঁয়া সকল প্রান্তে পৌঁছে দেওয়ার জন্য এই ডিজিটাল ডিভাইস অর্থাৎ মোবাইলের প্রচলন ব্যাপক হারে বিস্তার ঘটেছে। 

মানুষ এক সময় তার অজানা বিষয়কে জানতে বিভিন্ন মাধ্যম ব্যবহার করত। কিন্তু বর্তমানে এই মোবাইল ফোন  বিস্তার এর কারণে প্রযুক্তির ছোঁয়া সকলেই অনুভব করতে সক্ষম। এখন মানুষ তার অজানা তথ্য ঘরে বসেই মুহূর্তের মধ্যে পেয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম গুলোকে ব্যবহার করার মাধ্যমে। যেটি মোবাইলে আসক্তি হওয়ার প্রধান কারণ হিসেবে বিবেচিত। 

আর এই মোবাইলে আসক্তি বিশেষ করে যুবকদের ভিতরে বেশি লক্ষণীয় তারা বিভিন্ন গেমস খেলার মাধ্যমে এই মোবাইল ফোনে আসক্তি দিন দিন বৃদ্ধি করছে।

শিশুদের মোবাইল ফোনে আসক্তির কারণ

একটা সময় ছিল যখন শিশুরা সকালে ঘুম থেকে উঠে প্রথমেই তারা তাদের নিজ নিজ ধর্মগ্রন্থ চর্চা করতো। এবং বিকেল হলে মাঠে বিভিন্ন প্রকার  খেলাধুলায় ব্যস্ত থাকতো। প্রকৃতিতে মিশে থাকা বিভিন্ন পরিবেশ তাদের মনকে সুন্দর ও সচেত রাখত। খেলাধুলা এবং নিত্য কর্ম নিয়েই তাদের দিন কেটে যেত। এভাবেই আগের দিনের শিশুদের শৈশবকাল অতিবাহিত হতো। 

শিশুর পিতা মাতা সহ তার আত্মীয়-স্বজন বিভিন্নভাবে শিশুদের আনন্দ বিনোদন দিয়ে থাকতো। পিতা মাতার স্নেহ ও আত্মীয় স্বজনের ভালোবাসা নিয়েই একটি শিশুর শৈশবকাল পার হত। কিন্তু বর্তমান সময়ে এইসব কিছুই আর লক্ষ্য করা যায় না যার কারণে একজন শিশু মোবাইলে আসক্তি বৃদ্ধি পাচ্ছে। 

বর্তমান-সময়ে-পিতা-মাতা-তার-সন্তানের-প্রতি-সেরকম-যত্নশীল-নয়

বর্তমান সময়ে পিতা-মাতা তার সন্তানের প্রতি সেরকম যত্নশীল নয়।এখনকার শিশুরা তার পিতামাতাকে যদি কোনভাবে বিরক্ত করে তাহলে সেই পিতা-মাতা শিশুটাকে একটি মোবাইল ফোন দিয়ে  সান্ত্বনা প্রদান করেন। তখন সেই শিশুটা মোবাইলে বিভিন্ন কার্টুন অথবা গেমস খেলার মাধ্যমে মোবাইলে আসক্তি হয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে এটি দিন দিন বাড়তেই থাকে।

মোবাইলে আসক্তির ফলে যুবক যেভাবে ধ্বংস হচ্ছে 

বর্তমান সময়ে মোবাইলে আসক্তি দিন দিন যেভাবে বাড়ছে তার একটি বড় প্রভাব পড়ছে  যুবকদের  মধ্যে। আধুনিক যুগে প্রযুক্তির ব্যবহার সহজ হওয়ায় শৈশব থেকে শুরু করে বিভিন্ন বয়সের যুবক এই মোবাইল ফোনে আসক্তি। এর একটি বড় কারণ হলো শিক্ষা ক্ষেত্রে এ ডিজিটাল ডিভাইসের ব্যবহার। 

বর্তমান সময়ে শিক্ষা ক্ষেত্রকে একটি বিশেষ স্থানে নিয়ে যাওয়ার জন্য শিক্ষা ক্ষেত্রে এই মোবাইল ফোন বা স্মার্টফোন ব্যবহার করা প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। অনলাইনের মাধ্যমে বিভিন্ন শ্রেণীর ক্লাস এবং ছাত্র যদি তৎকালীন সময়ে কোন সমস্যার সমাধানে পরে তাহলে মুহূর্তের মধ্যেই এই মোবাইল ফোনের মাধ্যমে তার সমাধান করা সম্ভব হচ্ছে। এটি যেমন একদিকে উপকার করছে অপরদিকে এর অপকারও রয়েছে। 

এই মোবাইল ফোন ব্যবহার করে একদিকে যেমন শিক্ষা ক্ষেত্রে উন্নতি হচ্ছে তেমনি কিছু কিছু ছাত্র-ছাত্রী এই ডিজিটাল ডিভাইসটির অপব্যবহার এর মাধ্যমে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যাচ্ছে। তারা বিভিন্ন ভাবেএই ডিভাইস এর অপব্যবহার করছে। প্রথমেই বলেছিলাম বর্তমান যুগ বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ার যুগ। আর এই সোশ্যাল মিডিয়ার বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম গুলোকে ব্যবহার করে যুবক যুবতীরা ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যাচ্ছে।

তাছাড়া কিছু কিছু ছেলে মেয়ে মোবাইল ফোনে বিভিন্ন প্রকার গেমস খেলার মাধ্যমে এতে আসক্তি হয়ে পড়ছে। একবার কেউ এই গেমস এর প্রতি আসক্তি হয়ে গেলে সেটি থেকে বেরিয়ে আসা অনেক কষ্টকর হয়। 

আপনি মোবাইলে আসক্তি কিনা তা কিভাবে বুঝবেন

আপনি মোবাইলে আসক্তি কিনা তা বুঝর জন্য আপনি নিজেই যথেষ্ট। কেননা আপনি যখন প্রয়োজনের বাইরে মোবাইল ফোনকে ব্যবহার করবেন তখন সেই মোবাইল ফোন আপনাকেই ব্যবহার করে থাকে। কথাটি একটু উল্টা হলেও এটাই বাস্তবতা। কেননা আপনার অধিকাংশ সময় কেটে যায়, এই মোবাইল ফোন ব্যবহারের মাধ্যমে।

দিনের একটু সময় আপনি যদি মোবাইল থেকে বিরত থাকেন তাহলে বুঝবেন আপনি  হয়তো কতদিন মোবাইল ফোন ব্যবহার করেননি। দিনের সকল কিছুই আপনার অস্থির মনে হবে। কোন কাজ বা সিদ্ধান্ত নিতে অধিক সময় প্রয়োজন হবে। তারপরও আপনি নির্দিষ্ট কাজটি সময় মতো করতে পারবেন না। 

মোবাইলে-আসক্তির-ফলে-যুবক-যেভাবে-ধ্বংস-হচ্ছে

বাস্তব জীবনে আপনি যদি খেয়াল করেন তাহলে দেখতে পাবেন যে খাওয়া দাওয়া থেকে শুরু করে ঘুমানোর আগ পর্যন্ত কোনভাবেই আপনি মোবাইল হাত ছাড়া করতে পারছেন না। তাহলে আপনি বুঝে নেবেন যে আপনার মধ্যে মোবাইল ফোন বা স্মার্টফোনের আসক্তি পরিপূর্ণভাবে সৃষ্টি হয়েছে।

মোবাইলে আসক্তি থেকে সৃষ্ট রোগসমূহ 

মোবাইলে আসক্তি শুধু আপনার সময় কিংবা ভবিষ্যতকেই ধ্বংস করে না। এটি আপনার শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব বিস্তার করে। আপনি যদি একটানা মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে থাকেন তাহলে মোবাইল ফোনের ডিসপ্লেতে থাকা আলোক রশ্মি আপনার চোখের লেন্সকে মারাত্মকভাবে ক্ষতি সাধন করতে পারে। এক পর্যায়ে এটি মারাত্মক আকার ধারণ করে। 

তাছাড়া এটি ব্যবহারের ফলে অনেক শিশুর মাথাব্যথা থেকে শুরু করে চোখে ঝাপসা দেখা ইত্যাদি রোগ দেখা যায়। এছাড়াও অধিক সময় ধরে মোবাইল ফোনে আসক্তি হওয়ার কারণে শ্রবণ শক্তিও কমে যায়। মেজাজ খিটমিটে হয় এবং কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণে অধিক সময় নিয়েও সঠিক সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয় না।

মোবাইলে আসক্তি থেকে বেরিয়ে আসার উপায় 

কোন নেশাই সহজে পরে গেলে তা থেকে বেরিয়ে আসা একটু বেশি কঠিন। অন্যান্য নেশার মতোই মোবাইল ফোনে আসক্তি একটি নেশা। তারমানে এই নয় যে আপনি মোবাইলে আসক্তি থেকে বেরিয়ে আসতে পারবেন না। আপনি চেষ্টা করলেই এই আসক্তি থেকে বেরিয়ে আসতে পারেন। মোবাইলে আসক্তি থেকে বেরিয়ে আসার জন্য কয়েকটি কার্যকারী টিপস ঃ 

  • ঘুম থেকে ওঠার ১ থেকে ২  ঘন্টার মধ্যে মোবাইল ব্যবহার না করা 
  • ঘুমানোর এক ঘন্টা আগে মোবাইল না দেখা 
  • প্রয়োজন ব্যতীত মোবাইল হাতে না রাখা 
  • পড়তে বসার সময় মোবাইলের ডাটা অফ রাখা এবং মোবাইলটি হাতের নাগালের বাইরে রাখা। 
  • খাওয়া দাওয়ার সময় মোবাইল না দেখা। 

উপরোক্ত বিষয়গুলো মেনে চললে আশা করা যায় যে আপনি খুব দ্রুতই মোবাইল ফোনে আসক্তি থেকে  বেরিয়ে আসতে পারবেন।

লেখকের শেষ কথা 

মোবাইলে আসক্তি দিন দিন যেভাবে বাড়ছে তা হয়তো আপনি অনুভব করতে পারছেন। এবং ভবিষ্যতে এর ব্যবহার আরো বৃদ্ধি পাবে তাতে কোন প্রকার সন্দেহ নেই। এটি বৃদ্ধির ফলে সবচাইতে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে যুবকেরা। আর এই যুবকেরা হল একটি দেশের হৃৎপিণ্ড। তাই আপনি যদি এই নেশা থেকে বেরিয়ে আসতে না পারেন তাহলে আপনার জীবনে একটি অন্ধকার রাত নেমে আসবে। 

কোন নেশায় আসক্ত হয়ে গেলে তা থেকে বেরিয়ে আসা একটু কঠিন। তার মানে এই নয় যে আপনি এর থেকে বেরিয়ে আসতে পারবেন না। আপনি যদি আজকের এই পোস্টটি পুরোপুরিভাবে পড়ে থাকেন তাহলে আজকে থেকেই আপনি এর প্রয়োগ বাস্তব জীবনে করতে থাকুন। পোস্টটি যদি ভালো লাগে তাহলে অবশ্যই আপনার অন্যান্য বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন। নিয়মিত এরকম পোস্ট পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি ফলো করুন। ধন্যবাদ।



এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

গুড লাইক আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url