অল্প পুঁজিতে লাভজনক ব্যবসা
অল্প পুঁজিতে লাভজনক ব্যবসা কথাটি শুনতে অদ্ভুত মনে হলেও এর সত্যতা যাচাইয়ে আজকের এই আলোচনা। আজকে আমরা অল্প পুঁজিতে লাভজনক কয়েকটি ব্যবসা সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব।
আমরা অনেকেই অল্প পুজিতে ব্যবসা শুরু করতে চাই কিন্তু কিভাবে সেই কাজটি শুরু করব সেই বিষয়টি ভাবতে ভাবতে আমাদের অনেকগুলো দিন অতিবাহিত হয়ে যায়। তাই পুরো পোস্টটি ভালোভাবে পড়ার জন্য অনুরোধ রইল।
পোস্টস সূচিপত্রঃ অল্প পুজিতে লাভজনক ব্যবসা
- অল্প পুঁজিতে লাভজনক ব্যবসা করা কি সম্ভব
- আপনি কেন বিভিন্ন প্রকার ব্যবসা করবেন
- আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ব্যবসা না উদ্যোক্ত হওয়া
- কৃষি ক্ষেত্রকে ব্যবহার করে ব্যবসা করা
- খামার তৈরীর মাধ্যমে ব্যবসা বা উদ্যোক্ত হওয়া
- পোশাক এর ব্যবসা
- মেয়েদের বিভিন্ন প্রকার কসমেটিক্স এর সপ
- মুদি দোকান করার মাধ্যমে ব্যবসা
- চা অথবা কফি বিক্রি করার মাধ্যমে ব্যবসা করা
- লেখাপড়ার পাশাপাশি কয়েকটি ব্যবসা এবং উদ্যোক্তা
- আমাদের শেষ কথা
অল্প পুঁজিতে লাভজনক ব্যবসা করা কি সম্ভব
অল্প পুজিতে লাভজনক ব্যবসা করা কি সম্ভব? এইসব প্রশ্ন মাথায় নিয়ে অনেকেই বিভিন্ন প্রকার ব্যবসা শুরু করতেই ভয় পাই। কেননা একজন ব্যক্তি যখন কোন ব্যবসা করতে আগ্রহ প্রকাশ করে তখন তার কাছে সবচাইতে বড় বাধা হয়ে দাঁড়ায় টাকা। কারণ তখন তার মনে একটাই চিন্তা ঘুরে বেড়াই যে যাই করতে হোক না কেন অনেক টাকার প্রয়োজন। আর এইসব চিন্তা মাথায় ভাবতে ভাবতে তার অতীতে অনেকগুলো দিন অতিবাহিত হয়ে যায়।
এমনকি বর্তমানে তার সিদ্ধান্ত নিতে এতটাই সময় লাগে যে আসলেই কি অল্প পুঁজিতে কোন প্রকার ব্যবসা হয় বা হওয়া সম্ভব। এইসব বিষয় জানতে জানতে এবং মাথায় এক প্রকার দুশ্চিন্তা কাজ করাতে করাতে সে তার নির্দিষ্ট একটি চিন্তা ভাবনা থেকে দূরে সরে যায়। এতে করে যে কাজটি হয় কাজটি শুরু করার আগেই সমাপ্ত হয়ে যায়।
আমরা বিশ্বের বিভিন্ন ধনী ব্যক্তিদের একটু লক্ষ্য করলে দেখতে পাবো যে আজকের এই বিশ্বে যারা একমাত্র ধনী ব্যক্তি তারা অনেকেই তাদের এই ধনী হওয়ার পেছনের কারণ হচ্ছে ব্যবসা। তারমানে এই নয় যে তারা তাদের ব্যবসা শুরু করার আগে অনেক টাকা পয়সা ইনভেস্ট করার মাধ্যমে আজকে তাদের এ অবস্থান। কিন্তু না তারা তাদের এই অবস্থানের একমাত্র কারণ হলো তাদের বুদ্ধি এবং মেধা। তারা তাদের বুদ্ধি দিয়ে এবং মেধা দিয়ে আজকে বিশ্বের অন্যতম ধনী ব্যক্তির তালিকায় রয়েছে।
আপনি যদি তাদের সম্পর্কে বিস্তারিত জানেন তাহলে দেখতে পাবেন যে তারা সকলেই অল্প পুঁজি দিয়ে এবং তাদের শ্রম এবং বুদ্ধির মাধ্যমে তাদের এ অবস্থান। তাই আপনি যদি অল্প পুঁজির থাকার কারণে যেকোনো কাজ শুরু করতে ভয় পান তাহলে বিশ্বের বিভিন্ন ধনীদের পূর্ব অবস্থা সম্পর্কে অব্যাহত হন। আর আপনি একটি কথা অবশ্যই মনে রাখবেন যে কোন কাজ শুরু না করলে সেটা শেষ করা অসম্ভব।
তাই আমি মনে করি যে আপনি যদি কোন প্রকার ব্যবসা করতে ইচ্ছুক হন এবং আপনার বিনিয়োগ যদি অল্প হয় তাহলে আপনি বিভিন্ন ব্যবসা শুরু করতে পারেন। তাই আজকের এই পোস্টে অল্প পুজিতে কয়েকটি লাভজনক ব্যবসা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। তাই পোস্টটি ভালোভাবে পড়ার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ রইল।
আপনি কেন বিভিন্ন প্রকার ব্যবসা করবেন
আপনি কেন বিভিন্ন প্রকার ব্যবসা করবেন এ প্রশ্নটি যদি আপনাকে করা হয় তাহলে আপনি নিশ্চয়ই বলবেন ব্যবসা করা আমার একটি শখ। অথবা ব্যবসা করার মাধ্যমে আপনি সহজেই ধনী হতে চান। আপনি এটাও বলতে পারেন যে বর্তমানে চাকরির চাইতে ব্যবসা করা অধিক লাভজনক কাজ। এসব চিন্তা-ভাবনা যদি আপনার মাথায় ঘুরে তাহলে বিভিন্ন প্রকার ব্যবসা হতে পারে আপনার সঙ্গী।
অন্যদিকে আপনি যদি চিন্তা করেন বর্তমান সময়ে চাকরির বাজার যে পর্যায়ে এসে দাঁড়িয়েছে সেখান থেকে যে কেউ ব্যবসা করা কিংবা নিজে উদ্যোক্তা হওয়া খুবই জরুরী মনে করেন। বর্তমান সময়ে সমস্ত লেখাপড়া শেষ করে যখন একটি চাকরি করার প্রয়োজন হয় তখন একজন চাকরিপ্রার্থীকে অনেক কসর পোহাতে হয়। সেটি আপনি বাস্তবেও দেখে থাকতে পারেন। সেখান থেকে বলা যায় আপনার জন্য নির্দিষ্ট একটি ব্যবসা করা উত্তম।
কারণ চাকরির পরের ধাপটি হল ব্যবসা করা। এখন এই ব্যবসা আপনি শুরু করবেন কিভাবে সে বিষয়টি আপনাকে বুঝতে অনেক সময় লেগে যায়। এরপরও যদি আপনি বুঝে যান যে একটি নির্দিষ্ট ব্যবসা করবেন তার পরবর্তী যে ধাপটি হলো টাকা পয়সার ব্যাপার। এখন আপনার কাছে সেই রকম অর্থ-সম্পদ না থাকতেও পারে। তার জন্য কি আপনি থেমে যাবেন কখনোই না। আপনি অল্প পুজিতেই আপনার সেই যাত্রা আরম্ভ করতে পারেন। আজকের এই পোস্টে আমরা আপনাকে অল্প পুজিতে কয়েকটি ব্যবসা সম্পর্কে বিস্তারিত জানাবো।
আপনার ভবিষ্যত পরিকল্পনা ব্যবসা না উদ্যোক্তা হওয়া
আপনার ভবিষ্যত পরিকল্পনা ব্যবসা না উদ্যোক্তা এ বিষয়টি সম্পর্কে যদি আপনাকে বলা হয় তাহলে আপনি কি বলবেন? উত্তরে আপনি যেকোনো একটিকে বেছে নেবেন হয়তো আপনি নির্দিষ্ট একটি বিষয় নিয়ে ব্যবসা করবেন অথবা উদ্যোক্তা হবেন তাই তো। কিন্তু আজকে এই পোষ্টের মাধ্যমে আপনি আপনার ব্যবসাকে উদ্যোক্তাই পরিণত করবেন সে সম্পর্কেও আলোচনা করা হবে।
এখন আবার আপনার মনে প্রশ্ন হতে পারে যে যেকোনো ব্যবসা করা এবং সেখান থেকে উদ্যোক্তা হওয়ার জন্যেও তো অনেক পরিমাণ টাকার প্রয়োজন হয় আমার কাছে তো সেরকম অর্থ নেই। আজকের এই পোষ্টের মূল আলোচনার বিষয় হলো অল্প পুজিতে কিভাবে লাভজনক ব্যবসা করা সম্ভব। অতএব আপনাকে অধিক টাকা পয়সা বিনিয়োগ করার প্রয়োজন হবে না।
এখন অবস্থা বেধে ব্যবসার বিভিন্ন প্রকার রয়েছে। আর এসব প্রকার গুলোর মধ্যে হল আপনি নির্দিষ্ট ব্যবস্থাটি কোথায় শুরু করতে চাচ্ছেন। হতে পারে আপনি গ্রামে ব্যবসাটি শুরু করতে পারেন অথবা শহর অঞ্চলে ব্যবসা শুরু করতে পারেন। চাই প্রথমেই বলা যেতে পারে যে অবস্থান ভেদে ব্যবসার প্রকারভেদ নিজেকে চিহ্নিত করা।
বিষয়টি আপনি আর একটু পরিষ্কার ভাবে বুঝতে চাইলে দেখতে পাবেন যে আপনি যে এলাকায় বা গ্রামে বসবাস করেন না কেন সেখানকার মানুষের অধিকাংশ প্রয়োজনীয় জিনিস কি সে সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা নেওয়া। এতে করে যে উপকারটি হবে আপনি সহজেই যেকোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে সঠিক সময়ে কাজে লাগাতে সক্ষম হবেন। তাই ব্যবসার প্রথম পর্যায়ে হল আপনার একটি সঠিক সিদ্ধান্ত স্থির করা। এবং পরবর্তীতে সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কাজ পরিচালনা করা।
কৃষি ক্ষেত্রকে ব্যবহার করে ব্যবসা করা
কৃষি ক্ষেত্রকে ব্যবহার করে ব্যবসা করা একটি অন্যতম ব্যবসা মাধ্যম। কেননা আপনি লক্ষ করলে দেখতে পাবেন যে আমাদের দেশ অধিকাংশ কৃষি নির্ভর । তাদের এই হাত ধরেই বাংলাদেশের অর্থনৈতিক চাকা অধিকাংশেই সচল থাকে। তাদের উৎপাদিত বিভিন্ন খাদ্য দেশের চাহিদা পূরণ করে বৈদেশে রপ্তানির মাধ্যমে প্রচুর পরিমাণে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব হয়।
আর আপনি যদি এই কৃষি ক্ষেত্র টা কে আপনার ব্যবসা হিসাবে টার্গেট করে আপনি যদি এগোতে পারেন তাহলে আপনি একজন সফল ব্যবসায়িক বলে গণ্য হবেন। এখন বিষয় হলো কৃষি ক্ষেত্রটা কি খুব সহজ? এই সেক্টরে কি ব্যবসায় বা করা যায়? উত্তরে বলা যায় কৃষি সেক্টরটি অনেক বড়। এবং এই সেক্টর থেকে ভালো কিছু পেতে হলে অবশ্যই পরিশ্রম করতে হবে।
তাই যদি আপনি পরিশ্রম করে আনন্দ পান তাহলে কৃষি সেক্টর টা আপনার জন্য ব্যবসায় পরিণত হতে পারে। এখন কৃষি সেক্টরকে ব্যবহার করে কয়েকটি লাভজনক ব্যবসার ক্ষেত্র তুলে ধরা হলো
নার্সারি করাঃ নার্সারি করার মাধ্যমে আপনি খুব সহজেই কৃষি সেক্টর থেকে সাফল্য অর্জন করতে পারেন। কেননা আমাদের দেশে অধিকাংশেই দেখা যায় যে বড় গাছগুলো কাটার প্রতিযোগিতা লেগেই থাকে। সেক্ষেত্রে সেখানে বড় গাছের পরিবর্তে ছোট গাছ লাগার চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। সে ক্ষেত্রে আপনি যদি একটি নার্সারি তৈরি করেন সেখানে সকল প্রকার ছোট গাছ থেকে শুরু করে বিভিন্ন প্রকার গাছ বিক্রি করতে পারেন।
নার্সারির মধ্যে যে সকল গাছগুলো রাখা দরকার সেগুলো হল বিভিন্ন প্রকার ফুলের গাছ ফলের গাছ ইত্যাদি। এ সকল গাছগুলো মানুষ জমিতে লাগার পাশাপাশি ছাদের ওপরে বিভিন্ন প্রকার টপে লাগিয়ে থাকে। তাই আপনি কৃষির এই নার্সারি তৈরীর সেক্টর করার মাধ্যমে লাভজনক হতে পারে। এটি করার জন্য আপনাকে এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিতে হবে।
উক্ত কাজটি করার জন্য আপনাকে সেই রকম অর্থ সম্পদের প্রয়োজন হবে না। আপনার নির্দিষ্ট একটি জমি থাকলেই হবে। সাথে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা বিনিয়োগ করার মাধ্যমেই আপনি এই কাজটি আস্তে আস্তে শুরু করতে পারেন।
বাগান করাঃ বাগান করা অনেক মানুষের স্বপ্ন। এবং আপনি এই কৃষি সেক্টরকে ব্যবহার করে বিভিন্ন ফলের বাগান করতে পারেন। সে ক্ষেত্রে আপনার যেটি প্রয়োজন হবে সেটি হল কয়েক বিঘা জমি। আপনার যদি সেরকম জমি না থাকে সেক্ষেত্রে অন্যদের কাছ থেকে কয়েক বছর চুক্তিতে জমি নেওয়ার মাধ্যমে আপনার স্বপ্নের বাগান টি তৈরি করতে পারেন।
বিভিন্ন প্রকার ফল যেমন পেয়ারা আনারস তরমুজ স্ট্রবেরি শসা অথবা বিভিন্ন প্রকার আম চাষ করার মাধ্যমে আপনি আপনার স্বপ্নের বাগান তৈরি করতে পারেন। এবং প্রথম পর্যায়ে একটু খাটাখাটনি করে বাগানটি তৈরি করতে পারলেই পরবর্তীতে এখান থেকে লাভজনক হওয়া খুবই সহজ। আমরা প্রথমেই বলেছি কৃষি সেক্টর টা একটু কঠিন। তাই আপনি যদি একটু পরিশ্রম করে সফলতা অর্জন করতে চান তাহলে বাগান করা আপনার উত্তম সিদ্ধান্ত বলে গণ্য হবে।
খামার তৈরির মাধ্যমে ব্যবসা করা বা উদ্যোক্তা হওয়া
খামার তৈরির মাধ্যমে ব্যবসা করা বা উদ্যোক্ত হওয়া খুবই সহজ। সেক্ষেত্রে আপনি আপনার ব্যবসা বিভিন্ন প্রকার খামার যেমন গরু ছাগল হাঁস মুরগির অথবা মাছের পুকুর তৈরির মাধ্যমে আপনি খুব সহজেই লাভজনক হয়ে উঠতে পারবেন।। উক্ত খামারগুলো আপনি ছোট থেকেই শুরু করতে পারেন । আস্তে আস্তে যখন এ বিষয়গুলো তো আপনার অভিজ্ঞতা সম্পূর্ণ হবে তখন আপনি এ ব্যবসাটি বড় করতে পারবেন।
প্রথম অবস্থায় যেকোন খামার করার পূর্বে কয়েকটি গরু অথবা কয়েকটি ছাগল দিয়ে শুরু করতে হবে। এতে করে যে বিষয়টি জানা যাবে সেটি হল এর লাভ লসের পার্থক্য এবং এই থেকে পাওয়া বিশেষ অভিজ্ঞতা। যা আপনাকে পরবর্তীতে সেইসব বিষয় সম্পর্কে অব্যাহত করতে সাহায্য করবে। তাই আপনি যদি যেকোনো খামার করতে ইচ্ছুক হন তাহলে প্রথমে অল্প পরিসরে শুরু করা আপনার জন্য মঙ্গলময় হবে।
যে কোন প্রকার খামার করতে আপনাকে ন্যূনতম ১ থেকে ১-৫ শতক পরিমাণ জমির প্রয়োজন হবে। আর আর্থিকভাবে এক থেকে ৩ লক্ষ টাকার প্রয়োজন হবে। আর আপনি যদি মাছের পুকুর করতে চান সেক্ষেত্রে আপনার নির্দিষ্ট একটি জমি থাকতে হবে। সেক্ষেত্রে একটু ভয়বহুল খরচ বেশি হবে। তাছাড়া খামার করে যারা সফলতা অর্জন করেছে সেক্ষেত্রে তাদের পরামর্শ নিতে পারেন। এতে করে আপনি আরও সঠিক এবং নির্ভুল ধারণাটি পেয়ে যাবেন।
পোশাক এর ব্যবসা
পোশাক এর ব্যবসা অন্যতম একটি সেরা ব্যবসা হিসাবে গ্রহণযোগ্য। মানুষের কয়েকটি মৌলিক অধিকারগুলোর মধ্যে পোশাক অন্যতম। তাছাড়া আমরা যদি একটু খেয়াল করি তাহলে দেখতে পাবো মানুষের জন্য পোশাক কতটা গুরুত্বপূর্ণ। তাই পোশাক বিক্রির মাধ্যমে আপনি আপনার ব্যবসা শুরু করতে পারেন। এ ব্যবসাটি শুরু করতে তেমন কোন অর্থের প্রয়োজন হবে না।
প্রথমত আপনি যদি এই ব্যবসাটি হালকাভাবে শুরু করতে চান কোন প্রকার দোকান ভাড়া না নিয়ে সেক্ষেত্রে আপনার জন্য অল্প পুজিতে এ ব্যবসাটি খুবই ভূমিকা পালন করতে পারে। পরবর্তীতে এ ব্যবসাকে আপনি বড় করতে পারেন। এই ব্যবসাটি করতে আপনাকে মানবিক গুণবলি অর্জন করতে হবে। কেননা আপনি আপনার ক্রেতার সাথে যত পরিপার্টির সাথে কথা বলবেন ততই আপনার পোশাক বেচাকেনা বৃদ্ধি পাবে।
এখন প্রশ্ন হল এ ব্যবসাটি শুরু করতে কি পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন? প্রথমত আপনাকে যে বিষয়টি জানতে হবে সেটি হল কোন গোডাউন অথবা পোশাক শিল্প কারখানা থেকে আপনাকে নির্দিষ্ট পরিমাণে কিছু পোশাক স্বল্প দরে ক্রয় করতে হবে । তাহলে আপনার লাভ হওয়ার সম্ভাবনা অধিকাংশ বৃদ্ধি পাবে। বিষয়টি বুঝতে আপনার একটু সমস্যা হলেও পরবর্তীতে যখন আপনি এ ব্যবসার সাথে জড়িয়ে যাবেন তখন এর সকল বিষয় সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা পেয়ে যাবেন। তাই এই পোশাক এর ব্যবসাটি করার জন্য আপনার নূন্যতম ৫০ থেকে ১ লক্ষ টাকার প্রয়োজন হবে। তাহলেই আপনি এই ব্যবসাটি শুরু করতে পারবেন।
মেয়েদের বিভিন্ন প্রকার কসমেটিক্স এর সপ
মেয়েদের বিভিন্ন প্রকার কসমেটিক্স এর সপ বা দোকান দেওয়ার মাধ্যমেও আপনি আপনার ব্যবসা শুরু করতে পারেন। কসমেটিক মেয়েদের অন্যতম সাজ সজ্জার একটি বিষয়। বর্তমানে মেয়েরা ঘরের বাইরে বের হলেই বিভিন্ন প্রকার সাজ সজ্জার প্রয়োজন হয়। সেক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রকার কসমেটিক্স এর মালামাল বিক্রয় করার মাধ্যমে আপনি আপনার ব্যবসা শুরু করতে পারেন।
এই কসমেটিক্স একজন শিশু বাচ্চা থেকে শুরু করে বয়স্ক মহিলা পর্যন্ত এই জাতীয় পণ্যগুলো ক্রয় করে থাকে। তাছাড়া আপনি ছেলেদের কিছু কালেকশনও রাখতে পারেন আপনার এই কসমেটিক্স এর শপে। এই ব্যবসাটি করার জন্য প্রথমত আপনাকে যে অভিজ্ঞতা থাকা প্রয়োজন সেটি হল মেয়েদের পছন্দের বিভিন্ন রংকে চিহ্নিত করা। এবং সেই রংকে কেন্দ্র করে সে জাতীয় সকল প্রকার জিনিস বিক্রয় করা। এটি হতে পারে অন্যান্যদের চাইতে একটু ডিপেন্ড বিষয়।
এখন প্রশ্ন হতে পারে এই ব্যবসাটি শুরু করতে কিরূপ অর্থের প্রয়োজন পড়বে। প্রথমত আপনাকে যে কাজটি করতে হবে সেটি হল আপনি এ সকল পণ্যগুলো নির্দিষ্ট কোনো পাইকারি দোকান থেকে অল্প দামে ক্রয় করতে হবে এতে করে যে কাজটি হবে আপনি যে পণ্যগুলো অধিক দামে বিক্রি করতে পারবেন। নিম্নোক্ত এই ব্যবসাটি শুরু করতে আপনাকে সর্বনিম্ন ১০ হাজার থেকে শুরু করে ১ লক্ষ টাকার অর্থের প্রয়োজন হবে।
মুদি দোকান করার মাধ্যমে ব্যবসা
মুদি দোকান করার মাধ্যমে ব্যবসা করা যায়। আমরা যেখানেই যায় না কেন আশেপাশে লক্ষ করলে এই মুদির দোকান অধিকাংশই চোখে পড়ে। কেননা এসব মুদির দোকানে মানুষের নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র গুলো বিক্রয় করা হয় সে কারণেই মূলত এসব দোকানের সংখ্যা বেশি। এখনকার মানুষ হাতের কাছে তার প্রয়োজনীয় জিনিস পেয়ে গেলে সে অযথাই দূরে যাওয়ার প্রয়োজন বোধ করে না।
সে ক্ষেত্রে মুদির দোকান হতে পারে আপনার জন্য একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এই মুদিরদোকানে আপনি মানুষের নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস চাল আটা গম থেকে শুরু করে একটি পরিবারে যা যা প্রয়োজন সেসব জিনিসগুলো বিক্রয় করতে পারেন। এই ব্যবসার একটি টেকনিক হল আপনি যদি কোন পণ্য আগে থেকেই ক্রয় করে থাকেন এবং পরবর্তীতে সেই পণ্যের দাম বাড়ার সাথে সাথে আপনি যদি সেই পণ্যটি আগের কিনা দামে বিক্রি করতে পারেন তাহলে কাস্টমাররা আপনার দোকানের প্রতি আস্থা বৃদ্ধি পাবে। এতে করে পরবর্তীতে আপনার দোকানের ক্রয় বিক্রয় বহুবনে বেড়ে যাবে।
এখন প্রশ্ন হল এই মোদি দোকান শুরু করতে কিরূপ অর্থের প্রয়োজন হবে? প্রথমত আপনি ১০ হাজার থেকে শুরু করে ১ লক্ষ হাজার টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগ করতে পারেন। পরবর্তীতে এ বিষয়ে যখন আপনার ফুল অভিজ্ঞতা সৃষ্টি হবে সেক্ষেত্রে আপনি এ ব্যবসাটিকে বড় করতে পারেন। প্রয়োজনের আগেই বিভিন্ন মালামাল ক্রয় করে আপনি গোডাউন জাত করতে পারেন। পরবর্তীতে বিক্রয় করার জন্য। এতে করে আপনার ব্যবসা বড় এবং বৃদ্ধি পাবে।
চা অথবা কফি বিক্রি করার মাধ্যমে ব্যবসা করা
চা অথবা কফি বিক্রি করার মাধ্যমে ব্যবসা শুরু করা যাই। আপনি যদি একটু লক্ষ্য করেন তাহলে দেখতে পাবেন চা অথবা কফি খাই না এরকম ব্যক্তি খুব কমই আছে। তারা বিভিন্ন কথাবার্তা আলাপ আলোচনার মধ্য দিয়ে চা অথবা কফি খেয়ে থাকে। তাই চা অথবা কফি বিক্রি করার মাধ্যমে আপনি অল্প পুঁজিতে অধিক লাভজনক হতে পারেন।
এই কাজটি আপনি বিভিন্ন হাটবাজারে কিংবা মোর মোর অথবা বিভিন্ন বাস স্টেশন রেল স্টেশনে রাস্তার ফুটপাতে করতে পারেন এতে করে আপনার তেমন কোনো অর্থের প্রয়োজন হবে না। আপনি এই ব্যবসাটি পাঁচ পাচ হাজার থেকে শুরু করে দশ হাজার টাকার মাধ্যমে শুরু করতে পারেন এবং আপনি যদি নিয়মিত এ ব্যবস্থাটি চালিয়ে যান তাহলে মাসে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা ইনকাম করা আপনার জন্য খুবই সহজ হয়ে যাবে।
পরবর্তীতে আপনি যখন এই ব্যবসায় স্থায়ী হয়ে যাবেন তখন ব্যবস্থাটিকে বড় করতে পারেন। এক পর্যায়ে সেটি কফি হাউসে পরিণত করতে পারলে সেখান থেকে আপনি মাসে লক্ষাধিক টাকা ইনকাম করতেও সক্ষম হবেন। এই কাজটি করতে আপনাকে নির্দিষ্ট একটি চা অথবা কফি তৈরির দক্ষতা থাকতে হবে। ইতিমধ্যে আপনার যদি এরকম দক্ষতা থেকে থাকে তাহলে এই ব্যবসাটি হতে পারে আপনার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি ব্যবসা।
লেখাপড়ার পাশাপাশি কয়েকটি ব্যবসা এবং উদ্যোক্তা
লেখাপড়ার পাশাপাশি কয়েকটি ব্যবসা এবং উদ্যোক্তা বদলে দিতে পারে আপনার ভবিষ্যৎ। কেননা আমাদের সমাজে অনেক ছেলে মেয়ে প্রযুক্তির দার প্রান্তে বিভিন্ন ভাবে জড়িয়ে পড়ছে। এতে করে যে কেউ অল্পতেই ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যাচ্ছে। এভাবেই আমাদের সমাজের যুবসমাজ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। আর যুবসমাজ হল একটি দেশের হৃৎপিণ্ড। তাই লেখাপড়ার পাশাপাশি আপনি যদি ছোট কয়েকটা ব্যবসা এবং উদ্যোক্তা হতে পারেন তাহলে সেখানে আপনি আপনার কর্মসংস্থানের মাধ্যমে আরো পাঁচ সাত জনের কর্মসংস্থানের জায়গা করে দিতে সক্ষম হবেন।
তাই যুবক সমাজকে বিভিন্ন খারাপ নেশা থেকে ফিরিয়ে আনা এবং তাদের হাত ধরেই দেশের অর্থনৈতিক যাত্রা কে সচল রাখতে আপনি লেখাপড়ার পাশাপাশি কয়েকটি উদ্যোক্তা গ্রহণ করতে পারে। নিচে কয়েকটি উদ্যোক্তার সংক্ষিপ্ত উদাহরণ তুলে ধরা হলোঃ
- জুতা তৈরি জুতা তৈরি করার মাধ্যমে আপনি একজন উদ্যোক্তা হয়ে উঠতে পারেন। কারণ জুতা বা চপ্পল ব্যবহার করেনা এমন ব্যক্তি খুঁজে পাওয়া মুশকিল। তাই আপনি লেখাপড়ার পাশাপাশি জুতা তৈরি করার মাধ্যমে নিজে এবং অন্যান্য পাঁচজনের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করতে পারেন
- কলম খাতা তৈরি কলম খাতা তৈরি করার মাধ্যমে আপনি একজন উদ্যোক্তা হয়ে উঠতে পারেন। এতে করে আপনি আপনার প্রতিষ্ঠানে নিজে উদ্যোক্তার পাশাপাশি আরো কয়েকজনের কর্মসংস্থানের জায়গা তৈরি করতে সক্ষম হবেন।
- খামার তৈরি আপনি লেখাপড়ার পাশাপাশি ছোটখাটো করে একটি খামার তৈরি করতে পারেন সেখানে বেশি মুরগি সহ কবিতর এবং কোয়েল পাখি পালন করে সেখান থেকে উৎপাদিত পণ্য বাজারজাত করে লাভবান হতে পারে
- তেলের ব্যবসা তেলের ব্যবসা করার মাধ্যমে আপনি লেখাপড়ার পাশাপাশি লাভবান হতে পারে। সেক্ষেত্রে কৃষকের কাছ থেকে খাঁটি সরিষা সংগ্রহ করে সেখান থেকে তেল তৈরি করে বাজারজাত করার মাধ্যমে আপনি আপনার ব্যবসা শুরু করতে পারি
ওপরে উল্লিখিত কয়েকটি ছোট ব্যবসা যেখানে আপনি খুব সহজেই লেখাপড়ার পাশাপাশি এই উদ্যোক্তাগুলো গ্রহণ করতে পারেন। এতে করে যে গুগারটি হবে আপনি লেখাপড়ার পাশাপাশি নিজে উদ্যোক্তা হবেন এবং অপর ১০ জনকে কর্মসংস্থানের জায়গা তৈরি করে দিতে সক্ষম হবে। এখন বিষয় হল উপরোক্ত কয়েকটি ব্যবসা আপনি কিভাবে শুরু করতে পারেন?
ওপরে উল্লিখিত যে কয়েকটি ব্যবসার কথা বলা হয়েছে সেসব ব্যবসা শুরু করতে কয়েকটি ছোট মেশিন এর প্রয়োজন হবে। এখন প্রযুক্তির উন্নতির সাথে সাথে অনেক আধুনিক মেশিন খুব স্বল্প মূল্যে বাজারে পাওয়া যায়। সেই ক্ষেত্রে আপনার পুঁজি যদি ৪০ থেকে ১ লক্ষ হাজার টাকা হয় তাহলে সকল প্রকার মেশিন কেনা সম্ভব। এবং এই মেশিন কেনার মাধ্যমে আপনি আপনার যাত্রা শুরু করতে পারেন।
আমাদের শেষ কথা
ব্যবসা হচ্ছে নিজের কাছে সেটি যতই ছোট হোক না কেন। অন্যদিকে চাকরি হচ্ছে অন্যের অধীনে কাজ করা সেখানে আপনাকে যখন যেভাবে হুকুম করা হবে সেই মোতাবেক আপনাকে কাজ করতে হবে। তার মানে এই নয় যে আপনি চাকরি করবেন না। সেই বিষয়টি যদি আপনার কাছে ছোট মনে হয় তাহলে আপনি চাকরি করার পরিবর্তে যেকোনো একটি ছোটখাট ব্যবসা শুরু করতে পারেন। এই ছোটখাটো ব্যবসায়ী আপনাকে একদিন পাহাড় পরিমাণ অর্থ এনে দিতে সক্ষম হবে। তাই ধৈর্য ধারণ করে এবং পরিশ্রম করার মাধ্যমে আপনি যেকোন প্রকার ছোট ব্যবসা থেকে আপনার যাত্রা শুরু করতে পারেন।
আমাদের আরেকটি বড় সমস্যা হল আমরা যেকোনো কাজ শুরু করার আগে ভয় করি। সত্যি কথা বলতে কোন বিষয়ে ভয় করলে সে বিষয়ে থেকে জয় পাওয়া সম্ভব নয়। তাই সকল প্রকার বাঁধাকে অতিক্রম করে আপনাকে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। আজকের এই পোস্টে অল্প পুজিতে লাভজনক ব্যবসা সম্পর্কে কয়েকটি ধারণা সম্পর্কিত পোস্টটি পড়ে আপনি যদি একটু উপকৃত হন তাহলে পোস্টটি অবশ্যই আপনার অন্যান্য বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন। নিয়মিত এ সকল বিষয়ক আর্টিকেল পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি ফলো করুন আজ এ পর্যন্তই ধন্যবাদ।
গুড লাইক আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url